বিস্মিল্লাহির্ রাহমানির্ রাহীম
সুপ্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,
আসসালামুআলাইকুম। আশা করছি সবাই সুস্থ এবং ভাল ভাল আছেন। বর্তমানে করোনা মহামারীর বৈশ্বিক ও আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি বিবেচনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী-এর সদয় নির্দেশনায় সরকার ‘জীবন ও জীবিকা’-উভয়ের মাঝে ভারসাম্য নিশ্চিতকল্পে জনস্বার্থে ‘লকডাউন’ জারী করেছে। যার কারণে, সাময়িকভাবে, আজ স্বশরীরে মুখোমুখি আলাপ থেকে আমাদের বিরত থাকতে হচ্ছে।
২। আপনারা জানেন, গতকাল এবং আজ, ২২-২৩ এপ্রিল ২০২১, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানে এবং আমন্ত্রণে, বিশ্বের ৪০টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানগণ ‘Leaders Summit on Climate’- শীর্ষ সম্মেলনে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেছেন। উল্লেখ্য, গত ০৯ এপ্রিল ২০২১ তারিখে, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাত করে তাঁকে বর্তমান মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন-এর পক্ষ থেকে উক্ত সম্মেলনে দাওয়াত করার জন্য, মার্কিন রাষ্ট্রপতির জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জনাব জন কেরী বাংলাদেশ সফর করেন। জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক বহুমাত্রিক প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্রিয় নেতৃত্বমূলক ভূমিকা বিবেচনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে মার্কিন রাষ্ট্রপতি এ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ-টি গ্রহণ করেন, যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ এই দু’দিন ব্যাপি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে।
[৩। দুইদিনব্যাপী এই সম্মেলনের প্রথম দিন, গতকাল ২২ এপ্রিল ২০২১ তারিখে ৩ ভাগে মোট ৪টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম সেশন বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় (যুক্তরাষ্ট্র সময় সকাল ৮টা) শুরু হয় যার শিরোনাম ছিলো ‘Raising Our Climate Ambition’। প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশন শুরু হয় বাংলাদেশ সময় রাত ৮:৩০ মিনিটে (যুক্তরাষ্ট্র সময় সকাল ১০:৩০ মিনিট) যার শিরোনাম ‘Investing in Climate Solutions’। এর পরের ভাগের দুটি আলোচনা সেশন (Breakout Sessions) ছিল। সম্মেলনের দ্বিতীয় ও সমাপনী দিন, আজ ২৩ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মোট ২টি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম সেশন, সন্ধ্যা ৬টায়, ‘Unleashing Climate Innovation’, এবং দ্বিতীয় সেশন, সন্ধ্যা ৭:১৫ মিনিটে, ‘The Economic Opportunities of Climate Action’, শিরোনামে অনুষ্ঠিত হবে।]
৪। গতকাল, ২২ এপ্রিল ২০২১ তারিখে, সম্মেলনের প্রথম দিনে, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রিত বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি তাঁর বক্তব্য উপস্থাপন করেন। বক্তব্যের শুরুতেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মার্কিন রাষ্ট্রপতিকে তাঁকে এই সম্মেলনে দাওয়াত করার জন্য ধন্যবাদ জানান। একইসাথে তিনি, ‘প্যারিস জলবায়ু চুক্তি’-তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় প্রত্যাবর্তন এবং জলবায়ু বিষয়ক এই সম্মেলনের আয়োজন করার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান।
৫। বক্তৃতাকালে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, একটি অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ (Climate vulnerable) হওয়া সত্ত্বেও জলবায়ু অভিযোজন (adaptation) এবং প্রতিকার (mitigation)-এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্রিয় নেতৃত্বমূলক ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে প্রতি বছর বাংলাদেশ জলবায়ু অভিযোজন ও সহনশীলতা গঠনে (resilience building) ৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে যা আমাদের জিডিপি-এর ২.৫ শতাংশ। উপরন্তু, মায়ানমার থেকে আগত ১১ লক্ষাধিক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগণের উপস্থিতি বাংলাদেশের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব সমূহকে আরও গভীর করে তুলেছে। তারপরও বাংলাদেশ একটি নিম্ন কার্বন উদ্গীরণকারী দেশ হিসাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব প্রতিকার (mitigation)- এর জন্য আভ্যন্তরীণ নানা ক্ষেত্র যেমন- জ্বালানী, শিল্প, পরিবহন খাত প্রভৃতিকে এর আওতায় এনেছে। প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে আরো জানান যে, সরকার একটি উচ্চাকাংখী Nationally Determined Contribution (NDC) আগামী জুন ২০২১ এর মধ্যে উপস্থাপনের সিধান্তও গ্রহণ করেছে।
৬। আপনারা জানেন, বৈশ্বিক মহামারীর প্রকোপ সত্ত্বেও অনস্বীকার্যভাবে এই বছরটি বাংলাদেশের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ‘মুজিব শতবর্ষ’ এবং বাংলাদেশের ‘স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী’ উদ্যাপনের প্রেক্ষিতে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী ৩ কোটি গাছের চারা রোপণের কথা আমন্ত্রিত বিশ্বনেতাদের তাঁর বক্তৃতায় জানান। পাশাপাশি তিনি সরকারের গৃহীত ‘মুজিব জলবায়ু উন্নয়ন পরিকল্পনা’- শীর্ষক জাতীয় পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন।
৭। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ফোরাম বা Climate Vulnerable Forum (CVF) এবং V-20 এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। বাংলাদেশ তার দৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে উক্ত ফোরামদ্বয়ের সদস্য রাষ্ট্রসমূহের জলবায়ু অধিকার আদায়ে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি সম্প্রতি বাংলাদেশে Global Centre on Adaptation (GCA)-এর দক্ষিণ এশিয় কার্যালয় স্থাপিত ও এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘের প্রাক্তন